
| বুধবার, ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ | প্রিন্ট | 31 বার পঠিত
ব্যাংক খাত সংশ্লিষ্টরা বলছেন, করপোরেট গভর্ন্যান্স ও খেলাপি ঋণ ব্যাংক খাতের প্রধান সমস্যা। খেলাপি কমাতে ঢালাওভাবে ছাড় দেওয়া ঠিক হবে না। বরং খেলাপি দূর করতে ব্যাংকিং ব্যবস্থায় গ্রহীতা ও দাতার ক্ষেত্রে একইভাবে আইনের প্রয়োগ করতে হবে। আরও কঠোর হতে হবে কেন্দ্রীয় ব্যাংককে। একইভাবে প্রভিশন রাখতে না পারলে সংশ্লিষ্ট ব্যাংকির ঝুঁকি অনেক বেড়ে যায়।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য বলছে, দেশে কার্যক্রম পরিচালনা করা সরকারি-বেসরকারি সাতটি ব্যাংকের প্রভিশন ঘাটতি দাঁড়িয়েছে ২৪ হাজার ১৮৯ কোটি টাকা। কিছু ব্যাংকে প্রভিশন উদ্বৃত্ত রাখায় ব্যাংক খাতের সার্বিক প্রভিশন ঘাটতির পরিমাণ ১৯ হাজার ২৬১ কোটি টাকা। তবে আগের প্রান্তিকের তুলনায় প্রভিশন ঘাটতি কিছুটা কমেছে। গত সেপ্টেম্বর প্রান্তিক শেষে ব্যাংক খাতের সার্বিক প্রভিশন ঘাটতি ছিল ২৫ হাজার ২৭১ কোটি টাকা। সে হিসাবে তিন মাসের ব্যবধানে প্রভিশন ঘাটতি কমেছে ৬ হাজার ১০ কোটি টাকা।
প্রভিশন ঘাটতির তালিকায় দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন বেসিক ব্যাংক। এ ব্যাংকটিও নানা অনিয়ম ও অবস্থাপনার কারণে বেশ নাজুক অবস্থায়। ডিসেম্বরে এ ব্যাংকটির প্রভিশন ঘাটতি দাঁড়িয়েছে ৫ হাজার ১৯৫ কোটি টাকা। রাষ্ট্রায়ত্ত অপর ব্যাংক অগ্রণী ব্যাংকের প্রভিশন ঘাটতি দাঁড়িয়েছে ৪ হাজার ৩৪০ কোটি টাকা। এছাড়া রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন রূপালী ব্যাংকের প্রভিশন ঘাটতি ২ হাজার ২৭৩ কোটি টাকা, বাংলাদেশ কমার্স ব্যাংকের ৩৮৫ কোটি, স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংকের ২৩১ কোটি এবং প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংকের প্রভিশন ঘাটতি দাঁড়িয়েছে ৬৭ কোটি টাকা।ঋণ আদায় করতে ব্যর্থ হচ্ছে ব্যাংক। মন্দ ঋণ দিন দিন বাড়ছে। এসব ঋণে শতভাগ প্রভিশন রাখতে করতে হয়। খেলাপি দূর করতে ব্যাংকিং ব্যবস্থায় গ্রহীতা ও দাতার ক্ষেত্রে একইভাবে আইনের প্রয়োগ করতে হবে। আরও কঠোর হতে হবে কেন্দ্রীয় ব্যাংককে। একইভাবে প্রভিশন রাখতে না পারলে সংশ্লিষ্ট ব্যাংকির ঝুঁকি অনেক বেড়ে যায়।- বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ
বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ প্রতিবেদন বলছে, সদ্য সমাপ্ত ২০২৩ সালের ডিসেম্বর প্রান্তিক শেষে ব্যাংকিং খাতের মোট ঋণের স্থিতি দাঁড়িয়েছে ১৬ লাখ ১৭ হাজার ৬৮৮ কোটি টাকা। বিতরণ করা এসব ঋণের মধ্যে খেলাপিতে পরিণত হয়েছে এক লাখ ৪৫ হাজার ৬৩৩ কোটি টাকা। মোট বিতরণ করা ঋণের ৯ শতাংশ খেলাপি। এক বছর আগে অর্থাৎ ২০২২ সালের ডিসেম্বর প্রান্তিক শেষে ব্যাংকিং খাতে খেলাপি ঋণের পরিমাণ ছিল এক লাখ ২০ হাজার ৬৫৬ কোটি টাকা।
সে হিসাবে এক বছরের ব্যবধানে খেলাপি ঋণ বেড়েছে ২৪ হাজার ৯৭৭ কোটি টাকা বেশি। তবে তার আগের প্রান্তিক অর্থাৎ সেপ্টেম্বর প্রান্তিকের চেয়ে ৯ হাজার ৭৬৫ কোটি টাকা কমেছে। গত বছরের সেপ্টেম্বর প্রান্তিকে খেলাপি ঋণের পরিমাণ ছিল এক লাখ ৫৫ হাজার ৩৯৮ কোটি টাকা। যা তখন বিতরণ করা মোট ঋণের ৯ দশমিক ৯৩ শতাংশ।
তিনি বলেন, ‘ঋণ আদায় করতে ব্যর্থ হচ্ছে ব্যাংক। মন্দ ঋণ দিন দিন বাড়ছে। এসব ঋণে শতভাগ প্রভিশন রাখতে করতে হয়। খেলাপি দূর করতে ব্যাংকিং ব্যবস্থায় গ্রহীতা ও দাতার ক্ষেত্রে একইভাবে আইনের প্রয়োগ করতে হবে। আরও কঠোর হতে হবে কেন্দ্রীয় ব্যাংককে। একইভাবে প্রভিশন রাখতে না পারলে সংশ্লিষ্ট ব্যাংকির ঝুঁকি অনেক বেড়ে যায়।’
Posted ১০:১৪ পূর্বাহ্ণ | বুধবার, ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৪
Arthobiz | zaman zaman