
| বৃহস্পতিবার, ২৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ | প্রিন্ট | 71 বার পঠিত
অর্থবিজ ডেস্ক :
আগামীকাল পয়লা মার্চ শুক্রবার, ৫ম জাতীয় বীমা দিবস। রাজধানীসহ দেশের জেলা ও উপজেলায় আনুষ্ঠানিকভাবে দিনটি পালিত হবে। জাতীয় বীমা দিবস উপলক্ষে বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে। সরকারি কর্মসূচীর পাশাপাশি বেসরকারি বীমা কোম্পানিগুলোও পৃথক কর্মসূচী নিয়েছে।
কোনো দেশের অর্থনীতিতে বীমাশিল্পের অবদান অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ব্যাংকিং খাতের মতোই বীমা সেক্টর অর্থনীতিতে ভূমিকা পালন করে থাকে। কিন্তু বাংলাদেশের অর্থনীতিতে বীমাশিল্প এখনো উপযুক্ত অবদান রাখতে পারছে না। নানা সীমাবদ্ধতার মাঝে বীমা ও আর্থিক খাত তাদের ভূমিকা পালন করে চলেছে। জিডিপিতে আর্থিক ও বীমাখাতের অবদান মাত্র ৩ দশমিক ৩৬ শতাংশ। এর মধ্যে বীমাখাতকে যদি পৃথক করে দেখানো হয়, তাহলে এর অবদান ০ দশমিক ৫৬ শতাংশের মতো। অথচ বিশ্বের উন্নত দেশগুলোর অর্থনীতিতে বীমাখাতের অবদান অনেক বেশি। এমনকি দক্ষিণ এশীয় দেশগুলোর অর্থনীতিতেও বীমাখাতের অবদান অনেক বেশি। উন্নত বিশ্বের দেশগুলোতে বীমা পলিসি গ্রহণ অত্যন্ত স্বাভাবিক ঘটনা। কিন্তু আমাদের দেশের সাধারণ মানুষতো বটেই অনেক শিক্ষিত-সচেতন ব্যক্তিও বীমা পলিসি গ্রহণের আবশ্যকতা অনুভব করেন না। মূলত মানুষের মধ্যে বীমা পলিসি গ্রহণের ক্ষেত্রে সচেতনতার অভাবই এ জন্য দায়ী। সেই পরিপ্রেক্ষিতে বীমা দিবস পালন এই খাতের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি অনুষঙ্গ। জাতীয় বীমা দিবস পালনের একটি প্রেক্ষাপট রয়েছে। স্বাধীনতার স্থপতি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৬০ সালের ১ মার্চ তৎকালীন আলফা ইন্স্যুরেন্স কোম্পানিতে চাকরি গ্রহণ করেছিলেন। বঙ্গবন্ধুর বীমা কোম্পানির চাকরিতে যোগদানের সেই ঘটনাকে স্মরণীয় করে রাখার জন্য প্রতি বছর ১ মার্চ জাতীয় বীমা দিবস হিসেবে পালন করা হচ্ছে। জাতীয় বীমা দিবস পালনের উদ্দেশ্য হচ্ছে, সাধারণ মানুষকে বীমার প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে সচেতন করে তোলা, যাতে তারা নিজ উদ্যোগেই বীমা পলিসি গ্রহণে আগ্রহী হয়। ১৯৫৯ সালের ৭ আগস্ট পাকিস্তানের সামরিক শাসক জেনারেল আইয়ুব খান ‘ইলেকশন বডিস ডিসকোয়ালিফিকেশন অর্ডার, যা সংক্ষেপে ‘এবডো’ নামে পরিচিত আইন জারি করেন। এই আইনের ফলে স্বাভাবিকভাবে রাজনৈতিক কার্যক্রম পরিচালনার রাস্তা বন্ধ হয়ে যায়। সেই সময় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তার রাজনৈতিক কার্যক্রম পরিচালনার সুবিধার্থে ইন্স্যুরেন্স কোম্পানিতে চাকরি গ্রহণের পরিকল্পনা করেন। বঙ্গবন্ধু জীবিকা নির্বাহের জন্য বীমা কোম্পানিতে যোগদান করেননি। তিনি রাজনৈতিক কর্মকান্ড পরিচালনার সুবিধার্থে বীমা কোম্পানির চাকরিতে যোগদান করেছিলেন। কারণ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানিতে চাকরি গ্রহণ করলে স্বাভাবিকভাবেই দেশের মানুষের সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপন করা সম্ভব। বঙ্গবন্ধু আলফা ইন্স্যুরেন্স কোম্পানিতে চাকরিকালীন সময় দেশের বিভিন্ন স্থানের নেতৃবৃন্দের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ স্থাপন করতে সক্ষম হন। এতে তার রাজনৈতিক কর্মকান্ডে কোনো বিঘœ ঘটেনি। আলফা ইন্স্যুরেন্স কোম্পানিতে চাকরিকালীন অবস্থাতেই বঙ্গবন্ধু ঐতিহাসিক ৬ দফা, যা বাঙালির মুক্তিসনদ হিসেবে পরিচিত তা প্রণয়ন করেন। আলফা ইন্স্যুরেন্স কোম্পানিতে চাকরির সুবাদে বঙ্গবন্ধু দেশের বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে থাকা আওয়ামী লীগের কর্মীদের বীমা কোম্পানিতে সম্পৃক্ত করতে সক্ষম হন। বীমা কোম্পানিতে যোগদানের ফলে বঙ্গবন্ধু এই খাতের দুর্বলতা এবং সম্ভাবনা সম্পর্কে ভালোভাবে অবহিত হওয়ার সুযোগ পান। পরবর্তী সময় তিনি যখন রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব গ্রহণ করেন, তখন বীমাখাত নিয়ে বাস্তবসম্মত পদক্ষেপ গ্রহণ করতে সমর্থ হয়েছিলেন। বঙ্গবন্ধু যদি আরো কিছুদিন বেঁচে থাকতেন এবং রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব পালন করতে পারতেন, তাহলে বীমাখাত অনেক দূর এগিয়ে যেতে পারতো। কিন্তু ঘাতকরা তাকে সেই সুযোগ দেয়নি। ১ মার্চ বাংলাদেশের বীমাখাতের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি দিন। বীমাখাত সংশ্লিষ্টরা এই দিনে বঙ্গবন্ধুকে গভীর শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করবে। ১ মার্চ বাংলাদেশিদের জাতীয় জীবনে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি দিন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে জাতীয় বীমা দিবসের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করবেন । দেশ স্বাধীন হওয়ার পর বঙ্গবন্ধু বীমাশিল্পের উন্নয়নের জন্য বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেন। যেহতু তিনি নিজেই একসময় বীমা কোম্পানিতে যুক্ত হয়েছিলেন তাই তিনি এই খাতের সমস্যা এবং সম্ভাবনা সম্পর্কে অবহিত ছিলেন। পাকিস্তান আমলেও আমাদের এই অঞ্চলে বীমাশিল্পের বেশ প্রভাব লক্ষ করা যেতো। যেমন বাংলাদেশ যখন স্বাধীনতা লাভ করে তখন দেশে স্থানীয় এবং বিদেশি মিলিয়ে মোট ৪৯টি বীমা কোম্পানি ব্যবসারত ছিল। বিদেশি বীমা কোম্পানি বাদে স্থানীয় যেসব বীমা কোম্পানি ছিল তার অধিকাংশেরই মালিক ছিলেন অবাঙালি। স্বাধীনতাযুদ্ধের সময় অথবা অব্যবহিত পরে তারা এ দেশ ত্যাগ করে পাকিস্তানে চলে যান। ফলে এসব বীমা কোম্পানি পরিচালনায় সমস্যা দেখা দেয়। এছাড়া স্বাধীনতাযুদ্ধের অন্যতম চেতনা বা উপলক্ষ ছিল সমাজতান্ত্রিক অর্থনীতি প্রচলন করা। সেই সূত্রে যখন সমস্ত উৎপাদন যন্ত্রকে রাষ্ট্রমালিকানায় নিয়ে আসা হয়। সেই সূত্রে দেশে ব্যবসারত সব বীমা কোম্পানিকে জাতীয়করণ করা হয়। ৪৯টি বীমা কোম্পানিকে একত্রিত করে সুরমা, রূপসা, তিস্তা ও কর্ণফুলী নামে চারটি বীমা কোম্পানি গঠন করা হয়। এসব বীমা কোম্পানিকে সঠিকভাবে পরিচালনার জন্য ১৯৭৩ সালে ইন্স্যুরেন্স করপোরেশন আইন, ১৯৭৩ প্রণয়ন করে চারটি কোম্পানিকে ভেঙে রাষ্ট্রমালিকানায় জীবন বীমা করপোরেশন ও সাধারণ বীমা করপোরেশন গঠন করা হয়। সেই সময় বীমা কোম্পানিগুলো জাতীয় অর্থনীতিতে অবদান রাখতে শুরু করে। কিন্তু ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টে বঙ্গবন্ধুর নির্মম হত্যাকান্ডের পর অর্থনীতির অন্য খাতের মতো বীমা খাতও নানা জটিলতার আবর্তে পতিত হয়। বীমা খাত বিরাষ্ট্রীয়করনের মাধ্যমে বেসরকারি উদ্যোক্তাদের জন্য উন্মুক্ত কওে দেয়া হয়। তবে এর সুফল দেশবাসী তেমন পায়নি। সে সময়ে বীমাখাত নিয়ে তেমন কোনো চিন্তাভাবনা করা হয়নি। বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসীন হবার পর বীমা সেক্টর নিয়ে নতুন করে চিন্তাভাবনা শুরু হয়। সম্ভাবনাময় বীমাখাতকে এগিয়ে নেওয়ার লক্ষ্যে ১৯৩৮ সালের বীমা আইন সংস্কারের উদ্যোগ নেয়া হয়। কিন্তু বিগত সরকারের সময়ে উদ্যোগ নেয়া হলেও দীর্ঘ সময়ে আইনটি প্রণয়ন করা সম্ভব হয়নি। পরবর্তীতে আওয়ামীলীগ সরকারের সময়ে সংসদে আইনটি পাস হয় এবং ২০১০ সালের ১৮ মার্চ নতুন বীমা আইন- ২০১০ শিরোনামে গেজেট প্রকাশ করা হয়। এই আইনের বলে ২০১১ সালে ইন্স্যুরেন্স ডেভেলপমেন্ট অ্যান্ড রেগুলেটরি অথরিটি (আইডিআরএ) গঠন করা হয়। একজন চেয়ারম্যান, দুই জন সদস্যা এবং ৫৭ জন কর্মকর্তা-কর্মচারী নিয়ে আইডিআরএ কার্যক্রম পরিচালনা শুরু করে। আইডিআরএ গঠিত হবার পর বীমাখাতে উন্নয়নের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। আইডিআরএর বর্তমান চেয়ারম্যান অত্যন্ত বিচক্ষণভাবে এই খাত পরিচালনা করছে। তার নানানির্দেশনার ফলে বীমাখাত আগের যে কোনো সময়ের চেয়ে গতিশীলতা পেয়েছে। বর্তমানে রাষ্ট্রমালিকানাধীন দুটিসহ দেশে ব্যবসারত ব্যক্তিমালিকানাধীন বীমা কোম্পানির সংখ্যা হচ্ছে ৮২টি। এর মধ্যে লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি হচ্ছে-৩৬টি এবং নন-লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি ৪৬টি। এছাড়া ১৩৭টি বীমা জরিপকালীন প্রতিষ্ঠান নানাভাবে এই খাতে অবদান রেখে চলেছে।
বাংলাদেশে বীমাশিল্প যেভাবে বিকশিত হয়েছে ব্যাংকিং সেক্টরও তা হতে পারেনি। কিন্তু তারপরও বীমাশিল্প নানা জটিলতা এবং সমস্যায় জর্জরিত হয়ে আছে। ব্যাংকিং সেক্টর যেভাবে অর্থনীতিতে অবদান রাখছে বীমাখাত তা পারছে না। স্বাধীনতার আগেই আমাদের এই অঞ্চলে মোট ৪৯টি বীমা প্রতিষ্ঠান ব্যবসা করছিল। অর্থাৎ বাংলাদেশের বীমাখাত একটি প্রাচীন ঐতিহ্য নিয়েই তার যাত্রা শুরু করেছিল। কিন্তু যাত্রাপথ খুব একটা মসৃণ ছিল না। বীমাখাত যেভাবে এগিয়ে যাওয়ায় কথা ছিল তা হয়নি। বাংলাদেশে বীমাশিল্প কাঙ্খিত মাত্রায় বিকশিত না হওয়ার পেছনে বেশকিছু কারণ রয়েছে। প্রথমেই উল্লেখ করতে হয় বীমা সম্পর্কে সাধারণ মানুষের অজ্ঞতার বিষয়টি। উন্নত দেশগুলোতে প্রায় শতভাগ নাগরিক বীমা কাভারেজের আওতায় থাকে। কিন্তু আমাদের এখানে বীমা কাভারেজের হার খুবই কম। আমাদের দেশের প্রায় ৯০ শতাংশ মানুষই মুসলমান। তাদের অনেকের মাঝেই এমন একটি ধারণা প্রচলিত আছে যে, জীবন-মরণের মালিক আল্লাহ্। তাই বীমা পলিসি গ্রহণের কোনো আবশ্যকতা নেই। প্রতিটি মুসলমানই দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করে যে জীবন-মরণের মালিক একমাত্র আল্লাহ তায়ালা। আল্লাহর অনুমতি ব্যতীত কারো জীবন নাশ হবে না। বীমা পলিসি গ্রহীতাদের কিন্তু এধরনের কোনো আশ্বাস দেয়া হয় না যে, পলিসি গ্রহণ করলেই তাদের আর মৃত্যুর মুখোমুখি হতে হবে না। বীমা কোম্পানিগুলো আর্থিক ও শারীরিক ক্ষতির পূর্ব প্রতিরোধমূলক কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করে না। তারা শুধু দুর্ঘটনা ঘটে যার পর তার আর্থিক ক্ষতি পূরণের চেষ্টা করে। অর্থাৎ বীমা কো›ম্পানিগুলো ঘটনোত্তর আর্থিক সাপোর্ট দেয়ার চেষ্টা করে মাত্র। কাজেই আল্লাহর বিধানের সঙ্গে বীমা কোম্পানির কোনো বিরোধ নেই। দুর্ঘটনা তাকেই বলা হয়, যে ঘটনার জন্য মানুষ পূর্ব থেকে প্রস্তুত থাকে না। সেই অপ্রত্যাশিত ঘটনার পর অধিকাংশ মানুষই আর্থিক সংকটে পতিত হয়। করো বীমা পলিসি গ্রহণ করা থাকলে সেই দুর্দিনে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের পাশে দাঁড়িয়ে বীমা কোম্পানিগুলো আর্থিক সমর্থন বা সহায়তা দেবার চেষ্টা করে। বীমা পলিসি গ্রহণের সঙ্গে ইসলামের কোনো বিরোধ নেই। কোনো কোনো কোম্পানি ইসলামি বীমা চালু করেছে। তারা ইসলামি আদর্শ এবং রীতিনীতি মেনেই বীমা ব্যবসা করে থাকে। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্যি যে, আমাদের বীমা কোম্পানিগুলো মানুষের এই ভ্রান্ত ধারণা অপনোদনের কোনো ব্যবস্থা এখনো করতে পারেনি। বীমা পলিসি গ্রহণের প্রসঙ্গ এলেই এখনো অনেকেই আঁতকে ওঠেন। তারা ভাবেন এই বুঝি মৃত্যু তাদের দুয়ারে হানা দিচ্ছে। কিন্তু তার এটা ভুলে যান যে, আল্লাহ্ তার বান্দার মৃত্যু যখন লিখে রেখেছেন তখন তার মৃত্যু হবেই। বীমা কোম্পানির দায়িত্ব মানুষের মৃত্যু ঠেকানো নয়। আমাদের মধ্যে অনেকেই আছেন যারা বীমা পলিসির বিপরীতে প্রিমিয়াম জমা দেয়াকে বাড়তি ঝামেলা বলে মনে করেন। কিন্তু তারা এটা ভাবেন না যে, কোনো কারণে তিনি যদি দুর্যটনার শিকার হন বা অন্য কোনোভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হন, তখন আর্থিক সহায়তার প্রয়োজন হলে কোথেকে সেই সহায়তা আসবে? বিপদের দিনে আত্মীয়-স্বজন, বন্ধু-বান্ধবও পর হয়ে যেতে পারে। কিন্তু বীমা কোম্পানির পাশে দাড়ায়। পলিসি গ্রহণ করা থাকলে সেই দুর্দিনে বীমা কোম্পানি তার পাশে বন্ধুর মতো হয়ে দাঁড়াতে পারে।
বীমা বিশেষজ্ঞদের অনেকেই মনে করেন, বীমাখাত দ্রুত এবং পরিপূর্ণ বিকশিত না হবার পেছনে যে কারণগুলো দায়ী তার মধ্যে একটি হচ্ছে কোনো কোনো বীমা কোম্পানি নির্ধারিত সময়ে গ্রাহকের পাওনা পরিশোধ করে না। পাওনা নাবি যথাসময়ে পরিশোধ না করার ফলে বীমা কোম্পানি অন্যান্য আর্থিক খাতের তুলনায় বেশি মাত্রায় আস্থাহীনতায় ভুগছে। গ্রাহকের পাওনা বীমাদাবি যাতে যথাসময়ে পরিশোধ হতে পারে, সেজন্য আইডিআরএ একটি সেল গঠন করেছে। এই সেলে কোনো অভিযোগ জমা পড়লে তা অত্যন্ত দ্রুততার সঙ্গে নিষ্পত্তি করা হয়। অবশ্য দাবি পরিশোধে বিলম্ব হবার পেছনে অনেক সময় বীমা পলিসি গ্রাহকের অসচেতনতাও দায়ী থাকে। তারা সঠিকভাবে প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট পূরণ করেন না ফলে কোনো দুর্ঘটনা ঘটার পর সেই অসম্পূর্ণ ডকুমেন্টের ওপর ভিত্তি করে বীমাদাবি পরিশোধ করা কঠিন হয়ে পড়ে।
বীমা সেক্টর একটি দেশের অর্থনীতির জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু বাংলাদেশের সাধারণ মানুষ তো বটেই অনেক শিক্ষিত, উচ্চজ্ঞানসম্পন্ন মানুষও বীমার গুরুত্ব সম্পর্কে এখনো অবহিত নন। যেসব ক্ষেত্রে বীমা পলিসি গ্রহণ বাধ্যতামূলক করা সম্ভব সেখানে বিধান জারি করে বীমা পলিসি গ্রহণ বাধ্যতামূলক করা যেতে পারে। এবারের বীমা দিবসের অঙ্গীকার হোক ‘বীমা হোক সবার। বীমাখাতের উন্নয়নের জন্য আমাদের বাস্তবধর্মী কার্যক্রম গ্রহণ করতে হবে। বীমাখাত যেন নিজের যোগ্যতা বলেই বিকশিত হতে পারে আমাদের সেই চেষ্টাই চালাতে হবে। বীমাখাত যদি তার সম্ভাবনার পুরোটা বিকশিত করতে পারে, তাহলেই জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতি যথার্থ শ্রদ্ধা নিবেদন করা হবে।
Posted ৮:২৯ পূর্বাহ্ণ | বৃহস্পতিবার, ২৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৪
Arthobiz | zaman zaman