শুক্রবার ২৩শে মে, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ৯ই জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

শিরোনাম >>
শিরোনাম >>

বীমা সেক্টরে আশার আলো জ্বেলেছে ব্যাংকাস্যুরেন্স

  |   সোমবার, ০৪ মার্চ ২০২৪   |   প্রিন্ট   |   57 বার পঠিত

বীমা সেক্টরে আশার আলো জ্বেলেছে ব্যাংকাস্যুরেন্স

অর্থবিজ প্রতিবেদক:
বীমা খাতে হতাশার মধ্যে নতুন আশা জ্বালিয়েছে ব্যাংকাস্যুরেন্স। ৩ মার্চ রোববার থেকে ব্যাংকের মাধ্যমে ব্যাংকাস্যুরেন্স সেবা কার্যক্রম চালু হয়েছে। এতে এখন ব্যাংকের মাধ্যমে গ্রাহকরা বীমা সেবা গ্রহনের সুযোগ পাবেন। ব্যাংকের কর্মকর্তারাই বীমার এজেন্ট হিসাবে কাজ করবেন। তবে বর্তমানে সীমিত আকারে এই বীমা সেবা চালু করা হয়েছে। পরবর্তীতে হয়ত আরও ব্যাপক আকারে চালু করা হতে পারে। বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রন কর্তৃপক্ষ (আইডিআরএ) বীমা পন্য বিক্রয় করার জন্য পাচঁটি ব্যাংককে লাইসেন্স দিয়েছে। এ সব ব্যাংক বীমা পণ্য বিক্রয়ের জন্য চারটি বীমা কোম্পানির সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হয়েছে। খাত সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন, ব্যাংকের উপর জনগনের আস্থা রয়েছে। জনগনের এই আস্থা পূজিঁ করে বীমা ব্যবসার প্রসার ঘটানো সম্ভব হবে। ব্যাংক তাদের গ্রাহকদের কাছে বীমা পলিসি বিক্রয় করবে।
গ্রাহকদের টাকা ব্যাংকে সঞ্চয়ী হিসাবে জমা থাকায় প্রিমিয়াম দিতে সমস্যা হবে না। আবার গ্রাহকরাও মেয়াদ শেষে বীমা টাকা ফেরৎ পেতে তেমন বিড়ম্বনার শিকার হবে না। এ ব্যবস্থায় ব্যাংক ও বীমা কোম্পানি উভয়েই লাভবান হবে। তাদের ম্যানেজমেন্ট খরচ কমবে। কিন্তু বীমা প্রিমিয়াম অনেক বৃদ্ধ পাবে। ব্যাংকাস্যুরেন্স সেবা কার্যক্রম চালু হয়েছে। দেশের কয়েকটি বেসরকারি ব্যাংকের কিছু শাখায় প্রাথমিকভাবে এ সেবাটি মিলবে। ধীরে ধীরে ব্যাংকের বাকিসব শাখায় এবং অন্যান্য ব্যাংকেও ব্যাংকাস্যুরেন্স সেবা মিলবে।
১ মার্চ শুক্রবার জাতীয় বীমা দিবসের অনুষ্ঠানে ব্যাংকাস্যুরেন্স সেবার উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী। এবার জাতীয় বীমা দিবসের প্রতিপাদ্য ‘করব বীমা গড়ব দেশ, স্মার্ট হবে বাংলাদেশ’।
ইতোমধ্যে পাঁচটি ব্যাংককে বীমা পণ্য বেচাকেনার অনুমোদন দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক এবং বিমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ (আইডিআরএ)। রোববার ব্যাংকগুলোর কিছু শাখায় এ সেবা দেয়া হয়। পর্যায়ক্রমে তাদের সব শাখায় এবং অন্যান্য ব্যাংকও ব্যাংকাস্যুরেন্স সেবা দেবে। ব্যাংকগুলো হলো ব্র্যাক ব্যাংক, সিটি ব্যাংক, ইবিএল, ডাচ্-বাংলা ও স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংক।
ব্যাংকাস্যুরেন্স সেবা চালুর জন্য ইতোমধ্যে একটি নীতিমালা প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এতে বলা হয়েছে, ব্যাংকগুলো করপোরেট এজেন্ট হিসেবে বিভিন্ন বীমাপণ্য ও সেবা বিক্রি করতে পারবে।
এ জন্য কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে অনুমোদন নিতে হবে। একটি ব্যাংক একই সঙ্গে সর্বোচ্চ তিনটি জীবনবীমা ও তিনটি সাধারণ বীমার পণ্যসেবা বিক্রি করতে পারবে। যেসব ব্যাংকের প্রকৃত খেলাপি ঋণ ৫ শতাংশের কম, সেসব ব্যাংক শুধু এই সেবায় যুক্ত হতে পারবে। ব্যাংকগুলোকে বীমাপণ্য বিক্রির পর গ্রাহকের বীমা দাবি পাওয়ার ক্ষেত্রেও সহযোগিতা করতে হবে।
জানা গেছে, দেশি-বিদেশি কয়েকটি ব্যাংক নীতিমালা মেনে ব্যাংকাস্যুরেন্স সেবা দিতে ইতিমধ্যে কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে অনুমোদন নিয়েছে। গত মাসে প্রথম ব্যাংক হিসেবে সেবাটি চালুর অনুমতি পায় বেসরকারি সিটি ব্যাংক। এরপর ধীরে ধীরে অন্য ব্যাংকগুলো কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে অনুমতি নেয়।
জানা যায়, ব্যাংকাস্যুরেন্স সেবা দিতে বহুজাতিক বিমা কোম্পানি মেটলাইফ বাংলাদেশের সঙ্গে চুক্তি করেছে স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড, ব্র্যাক ব্যাংক ও ইস্টার্ণ ব্যাংক লিমিটেড (ইবিএল)।
গার্ডিয়ান লাইফের সঙ্গে চুক্তি করেছে দি সিটি, ডাচ্-বাংলা ও মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক (এমটিবি)। প্রগতি লাইফ, গ্রিন ডেলটা ও পাইওনিয়ার ইনস্যুরেন্স কোম্পানির সঙ্গে চুক্তি করেছে এমটিবি। এবি ব্যাংক চুক্তি করেছে প্রগতি লাইফের সঙ্গে। ব্যাংকগুলো তাদের কর্মীদের বিশেষ এই সেবা প্রদানের বিষয়ে প্রশিক্ষণ দিচ্ছে।
দেশের বেশিরভাগ মানুষ দিন দিন বীমার প্রতি আগ্রহ হারাচ্ছে। তারা বলছেন, মেয়াদ শেষে টাকা পেতে হয়রানি বা না পাওয়ার মত অভিজ্ঞতাই এর মূল কারণ। এ অবস্থায় ব্যাংকের মাধ্যমে পলিসি বিক্রির সুযোগ, ব্যাংকাসুরেন্সে আশা দেখছেন বিমাখাত সংশ্লিষ্টরা। আর নিয়ন্ত্রক প্রতিষ্ঠান বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রন কর্তৃপক্ষ (আইডিআরএ) বলছে, গ্রাহকের অর্থের সুরক্ষায় বীমা কোম্পানির সক্ষমতা তদারকিতে বাড়তি জোর দেয়া হচ্ছে।
দুর্ঘটনা মৃত্যুর মত অনিশ্চয়তা এবং জীবন ও সম্পদের আর্থিক সুরক্ষায় বিশ্বের বেশিরভাগ দেশে বিমা জনপ্রিয় মাধ্যম। কিন্তু বাংলাদেশে মানুষের বীমার প্রতি আগ্রহ বরবারই কম, যা দিন দিন আরো কমেছে। পরিসংখ্যান মতে, গতবছর বীমাখাতে পলিসির সংখ্যা কমেছে প্রায় ৩ লাখ। বীমা দাবি নিষ্পত্তির হার কিছুটা বাড়লেও সাধারণ মানুষের নেতিবাচক ধারণা কমেনি।
বীমার প্রতি মানুষকে আগ্রহী করতে বিভিন্ন দেশের মত এদেশেও ব্যাংকাসুরেন্স চালু হলো। এতে ব্যাংকেও বিক্রি হবে পলিসি।
ব্যাংকাসুরেন্স চালু হওয়ায় ব্যাংকের প্রশিক্ষিত ও দক্ষ জনবলের মাধ্যমে বীমা পণ্য ব্যাংকের গ্রাহকদের মধ্যে বিপণন করা হবে। ফলে বীমা গ্রাহকের সংখ্যা বৃদ্ধি পাবে, বীমা পলিসি তামাদির হার হ্রাস পাবে। সার্বিকভাবে বীমার আধুনিকতা বৃদ্ধি পাবে বলে জানিয়েছেন বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ- আইডিআরএ’র চেয়ারম্যান মোহাম্মদ জয়নুল বারী। বাংলাদেশ ইন্স্যুরেন্স এসোসিয়েশনের প্রথম ভাইস প্রেসিডেন্ট নাসির উদ্দিন আহমেদ অর্থবিজকে বলেন, বীমা ব্যবসার সংকট অনেকটা কেটে যাবে। বীমা সেক্টরে স্বচ্ছতা নিশ্চিত হবে। বাষির্ক প্রিমিয়াম আয় বৃদ্ধি পাবে।

Facebook Comments Box
advertisement

Posted ১০:২৮ অপরাহ্ণ | সোমবার, ০৪ মার্চ ২০২৪

Arthobiz |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

advertisement
advertisement
advertisement

এ বিভাগের আরও খবর

সম্পাদক : অহিদুজ্জামান মিঞা
সম্পাদকীয় ও বাণিজ্যিক কার্যালয়: খান ম্যানশন, ৮-ই, ২৮/এ-৫, টয়েনবি সার্কুলার রোড, মতিঝিল বাণিজ্যিক এলাকা, ঢাকা-১০০০।
ইমেইল: arthobiz61@gmail.com
যোগাযোগ: 01670045191