
| বৃহস্পতিবার, ১২ সেপ্টেম্বর ২০২৪ | প্রিন্ট | 37 বার পঠিত
নোবেল বিজয়ী ড. মুহম্মদ ইউনূসের নেতৃত্ত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকারকে সুস্বাগতম। বৈষম্য বিরোধী ছাত্র জনতা আন্দোলনের মুখে ৫ আগস্ট পদত্যাগ করে দেশ ছেড়ে পালিয়েছেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ছাত্র জনতার এই আন্দোলনে শেখ হাসিনার সরকারের পতনের পর গঠিত হয় নোবেল বিজয়ী ড. মুহম্মদ ইউনূসের নেতৃত্ত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকার। এই আন্দোলনে বিপুল সংখ্যক শিক্ষার্থীর মৃত্যু হয়েছে। আহত হয়ে আরও অনেকে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। আন্দোলনে শাহাদৎবরনকারীদের আত্মার শান্তি কামনা এবং তাদের শোকাহত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জ্ঞাপন, ও হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আহতদের দ্রুত আরোগ্য কামনা করছি।
দেশের সাবির্ক পরিস্থিতি ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হয়ে আসছে। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতির পাশাপাশি অর্থনৈতিক কর্মকান্ডেও গতি ফিরে আসছে। ব্যবসা বাণিজ্য সচল হচ্ছে। গত ১৫ জুলাই থেকে চলে আসা আন্দোলনের মুখে ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার পদত্যাগ এবং ৮ আগস্ট অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের আগ পযর্ন্ত দেশে একটি শাসরুদ্ধকর পরিস্থিতি ছিল। অন্তর্বর্তী সরকার পেয়েছে বিগত সরকারের রেখে যাওয়া একটি দুর্বল অথীনীতি। দেশের অর্থনীতি খুবই নাজুক। এ অবস্থায় সরকারের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ ছিল দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি ঘটানো। এ ক্ষেত্রে বলা চলে সরকার অনেকটাই সফল হয়েছে। সরকারের সামনে এখন বড় চ্যালেঞ্জ অর্থনৈতিক অবস্থার পরিবর্তন ঘটানো। আর্থিক খাতের ব্যাপক সংস্খার করা। ব্যাংক খাত নাজুক অবস্থায় রয়েছে। খেলাপি রিনের জাতাকলে ব্যাংকগুলোর ত্রাহী অবস্তা। পত্রিকায় প্রকাশিত খবর অনুযায়ি ৯৩ হাজার কোটি টাকা রিন খেলাপি। এর মধ্যে প্রায় দুটি ব্যবসায়ি গ্রুপের কাছে প্রায় ৮০ হাজার কোটি টাকা পাওনা রয়েছে। এ দুটি ব্যবসায়ি গ্রুপ পতিত সরকারের ঘনিষ্ট। তারা সরকারের প্রভাব খাটিয়ে নামে বেনামে ব্যাংক লোন নিয়ে এ সব টাকা আত্মসাৎ করেছে। তাদের বিরুদ্ধে একাধিক ব্যাংক ও বীমা পতিষ্ঠান দখল করে নেয়ারও অভিযোগ রয়েছে। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে নির্বাচন দেয়ার আগে বিগত সরকারের দীর্ঘ ১৫ বছরের শাসনামলে রেখে যাওয়া জঞ্জাল পরিস্কার করতে হবে। রাষ্ট্রের প্রতিটি সেক্টরে জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে হবে। বিদায়ি সরকারের সময়ে দুর্নীতিতে দেশের ব্যাংক ও আর্থিক খাতসমূহ ধংস হয়ে গেছে। ৯ টি ব্যাংকের অবস্থা খুবই খারাপ। এ সকল ব্যাংকের জন্য রেড এ্যালাট জারি করা হয়েছে। অন্য ব্যাংকগুলোও চলছে খুড়িয়ে খুড়িয়ে। ব্যাংকের হাজার হাজার কোটি টাকা লুট হয়েছে। বিগত সরকারের সাথে ঘনিষ্ট কয়েকটি ব্যবসায়ি গ্রুপের কাছে ব্যাংকের হাজার হাজার কোটি টাকা চলে গেছে। এ মহলটি নামে বেনামে হাজার হাজার কোটি টাকা লোন নিয়ে ব্যাংক খালি করে দিয়েছে। বিগত সরকারের ঘনিষ্টজনেরা নানা ভাবে এই অর্থ লুট করেছে। প্রশাসনের গুরুত্বপূর্ণ পদে থাকা কিছু সংখ্যক শীর্ষ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ উঠছে। এ সব অর্থ পাচারকারিদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে।
দেশের গুরুত্বপূর্ণ বীমা খাত অর্থমন্ত্রনালয়ের অধিন। এই খাতটিতেও ব্যাপক সংস্কারের প্রয়োজন। বীমা খাতে নানা অনিয়ম দীর্ঘদিনের। কিছু বীমা প্রতিষ্ঠানে ব্যাপক অনিয়ম হয়েছে। এই অনিয়মের লাগাম টেনে ধরতে যেয়ে নিয়ন্ত্রক সংস্থাকেও পড়তে হয়েছে বিপাকে। ফলে আশানুরূপ সংস্কার করতে পারছে না নিয়ন্ত্রক সংস্থা। এ ছাড়া সংস্থাটির কোন কোন কর্মকর্তার কর্মকান্ড নিয়েও বিতর্ক রয়েছে। আইন সবার জন্য সমান। এটি প্রচলিত বাক্য। বীমা সেক্টরে এর ব্যতিক্রম লক্ষ্য করা যাচ্ছে। বিষয়টি হচ্ছে এমন কর্তৃপক্ষ হচ্ছে ”শক্তের ভক্ত, নরমের যম”, এ ধরনের দ্বিমুখি আচরনে সেক্টরে শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠিত হবে না। বিষয়টি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের ভেবে দেখা উচিৎ।
Posted ৬:৩৮ অপরাহ্ণ | বৃহস্পতিবার, ১২ সেপ্টেম্বর ২০২৪
Arthobiz | zaman zaman