
| সোমবার, ০৬ মে ২০২৪ | প্রিন্ট | 146 বার পঠিত
অর্থবিজ প্রতিবেদক :
ন্যাশনাল ব্যাংকে অচলাব্যস্থা নিরসনে বাংলাদেশ ব্যাংক খলিলুর রহমানকে ব্যাংকটির পরিচালনা পর্ষদে নতুন চেয়ারম্যান হিসেবে নিয়োগ দিয়েছে। একই সঙ্গে ব্যাংকের পর্ষদে বেশ কয়েকজন পরিচালকও নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। ব্যাংকটির পর্ষদে এই নিয়োগ দেয়া হয়। এর আগে ন্যাশনাল ব্যাংকের চেয়ারম্যানসহ পর্ষদের অধিকাংশ সদস্য পদত্যাগ করেন। এতে ব্যাংকটি পরিচালনায় অচলাবস্থার সৃষ্টি হয়। এ অবস্থায় কেন্দ্রীয় ব্যাংক রোববার নতুন চেয়ারম্যান নিয়োগ দিয়ে পরিচালনা পর্ষদ পুনর্গঠন করে।
নতুন করে গঠন করা পর্ষদে ১০ সদস্যের মধ্যে আগের তিন পরিচালককে রাখা হয়েছে। তারা হলেন উদ্যোক্তা পরিচালক খলিলুর রহমান, ব্যাংকটির উদ্যোক্তা শেয়ারহোল্ডার মোয়াজ্জেম হোসেন ও সিকদার ইন্স্যুরেন্সের পক্ষ থেকে মনোনীত পরিচালক সফিকুর রহমান।
নতুন করে পর্ষদে আনা হয়েছে পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) সাবেক কমিশনার ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক হেলাল উদ্দিন নিজামী, চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্ট রতœা দত্ত ও বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক নির্বাহী পরিচালক জহুরুল হুদাকে।
প্রতিনিধি পরিচালক হিসেবে নতুন করে আনা হয়েছে প্রিমিয়ার ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ রিয়াজুল করিম, ব্যবসায়ী এরশাদ মাহমুদ, আইনজীবী এহসানুল করিম ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক একে এম তফাজ্জল হক।
বেসরকারি খাতের ন্যাশনাল ব্যাংকের কর্তৃত্ব নিয়ে সিকদার পরিবারের মধ্যে বিরোধ দেখা দেয়। প্রয়াত জয়নুল হক সিকদারের মেয়ে পারভীন হক সিকদার আছেন একদিকে, অন্যদিকে তার দুই ভাই রিক হক সিকদার ও রন হক সিকদার। ভার্চুয়াল এজিএমে পাতানো ভোটের মাধ্যমে তাকে পর্ষদ থেকে বাদ দেওয়া হতে পারে– এমন শঙ্কায় পারভীন হক সিকদারের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে গত বছরের ২১ ডিসেম্বর নির্ধারিত বার্ষিক সাধারণ সভার (এজিএম) ওপর স্থিতাবস্থা দেন আদালত। এর আগে একই শঙ্কা জানিয়ে এজিএম বন্ধের উদ্যোগ নিতে শেয়ারবাজারের নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসির চেয়ারম্যান বরাবর চিঠি লেখেন তিনি। এর পরিপ্রেক্ষিতে ওই সময় পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) সুপারিশে পর্ষদ ভেঙে নতুন পর্ষদ গঠনের আদেশ জারি করে বাংলাদেশ ব্যাংক। যেখানে চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পান ড. সৈয়দ ফরহাত আনোয়ার। এছাড়া পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পেয়েছিলেন বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক নির্বাহী পরিচালক মো. সিরাজুল ইসলাম, সাউথইস্ট ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. কামাল হোসেন, খলিলুর রহমান, পারভিন হক সিকদার, শফিকুর রহমান ও মোয়াজ্জেম হোসেন। কিন্তু সাড়ে চার মাস যেতে না যেতেই স্বয়ং কেন্দ্রীয় ব্যাংকের অযাচিত হস্তক্ষেপের অভিযোগ তুলে পদত্যাগ করল ব্যাংকটির পরিচালকরা।
ব্যাংকটির দ চেয়ারম্যান জয়নুল হক সিকদার মারা যান ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে। এরপর থেকে চেয়ারম্যানের দায়িত্বে ছিলেন তার স্ত্রী মনোয়ারা সিকদার। তাদের মেয়ে পারভীন হক সিকদার, ছেলে রিক হক সিকদার ও রন হক সিকদার ব্যাংকটির পরিচালক ছিলেন। ৯ সদস্যের পরিচালনা পর্ষদে সিকদার ইন্স্যুরেন্সের প্রতিনিধি হিসেবে ছিলেন লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. সফিকুর রহমান। সবমিলিয়ে ন্যাশনাল ব্যাংকে সিকদার পরিবারের শেয়ার রয়েছে ১৬ দশমিক ৫৫ শতাংশ।
জানা গেছে, ব্যাংকটির একিভূত করা নিয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সঙ্গে ন্যাশনাল ব্যাংক কর্তৃপক্ষের মতবিরোধ সৃষ্টি হয়। কোনো ব্যাংকের সঙ্গে একীভূত না হয়ে নিজেরাই সবল হতে চায় বেসরকারি ন্যাশনাল ব্যাংক। কিন্তু কেন্দ্রীয় ব্যাংক জোর করে অন্য ব্যাংকের সঙ্গে একীভূত করতে চায় বলে অভিযোগ করে করে ন্যাশনাল ব্যাংক কর্তৃপক্ষ। এ ঘটনার জের ধরে ন্যাশনাল ব্যাংকের চেয়ারম্যানসহ পরিচালনা পর্ষদের কয়েকজন পরিচালক গত বৃহস্পতিবার পদত্যাগ করেন।
Posted ৭:২৯ অপরাহ্ণ | সোমবার, ০৬ মে ২০২৪
Arthobiz | zaman zaman