
| বৃহস্পতিবার, ০৭ মার্চ ২০২৪ | প্রিন্ট | 248 বার পঠিত
অর্থবিজ প্রতিবেদক :
দেশের সরকারি-বেসরকারি সকল প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয় এবং কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সকল শিক্ষার্থীকে ‘বঙ্গবন্ধু শিক্ষা বীমা’র আওতায় আনার উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। এই উদ্যোগ বাস্তবায়নে গত ৪ মার্চ দেশের সকল জেলা প্রশাসককে নিদের্শনা দিয়েছে বীমা খাতের নিয়ন্ত্রক সংস্থা বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রন কর্তৃপক্ষ (আইডিআরএ)। সরকারের এই উদ্যোগে একদিকে শিক্ষার্থীদের লেখা পড়ার খরচ যোগাতে কিছুটা হলেও আর্থিক নিরাপত্তা নিশ্চিত হবে এবং অপরদিকে দেশে বীমা ব্যবসারও প্রসার ঘটবে বলে মনে করছেন খাত সংশ্লিষ্টরা। এ প্রসঙ্গে জেনিথ ইসলামী লাইফের মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা এবং বাংলাদেশ ইন্স্যুরেন্স ফোরামের ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি জেনারেল এম.নুরুজ্জামান অর্থবিজকে বলেন, সরকারের এটি একটি সময়োপযোগি সিদ্ধান্ত। শিক্ষার্থীরা মাত্র ৮৫ টাকা প্রিমিয়াম দিয়ে বীমা গ্রাহক হবার সুযোগ পাবে। বর্তমান পরিস্থিতিতে এই টাকার অংক খুবই সামান্য। কিন্তু এর একটি ফিটব্যাক তারা পাবে। বীমা কোম্পানিগুলোও এর সুফল পাবে। এই ব্যবস্থার মাধ্যমে স্বাভাবিক ভাবে গ্রাম পর্যায়ে বীমার সুফল সম্পর্কে একটি ম্যাসেস ঘরে ঘরে পৌছে যাবে। বীমা নিয়ে মানুষের মধ্যে সৃষ্ট খারাপ ধারনা দুর হবে। এতে বীমা মানুষ বীমা করতে উৎসাহিত হবে। বীমা ব্যবসা প্রসারে সহায়ক ভূিমকা রাখবে। অপরদিকে স্কুল ঝরে পড়ার হারও কমে আসবে। নি:সন্দেহে এটি একটি প্রশংসনীয় উদ্যোগ।
কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ জয়নুল বারী স্বাক্ষরিত জেলা প্রশাসকদের কাছে পাঠানো এ সংক্রান্ত নিদের্শনা পত্রে বলা হয়েছে, বঙ্গবন্ধু শিক্ষা বীমা পরিকল্পটির উদ্দেশ্য হলো দেশের শিক্ষার্থীদের ঝরে পড়া রোধ করা। এ বীমার আওতায় ৩ থেকে ১৭ বছরের কোন শিক্ষার্থীর পিতা-মাতা বা আইনগত অভিভাবক উক্ত বীমা সুবিধার আওতায় আসতে পারেন।
৮৫ টাকা প্রিমিয়াম পরিশোধের মাধ্যমে এ বীমার আওতায় আসার পর কোন শিক্ষার্থীর অভিভাবকের শারীরিক অক্ষমতা বা মৃত্যুতে শিক্ষার্থীর বয়স ১৭ বছর হওয়া পর্যন্ত মাসিক ৫০০ টাকা হারে বৃত্তি প্রাপ্য হবে, যা শিক্ষার্থীর পড়াশোনা চলমান রাখার ক্ষেত্রে সহায়ক ভূমিকা পালন করবে।
বার্ষিক প্রিমিয়াম আনুপাতিক হারে বৃদ্ধি করে বর্ধিত বীমা সুবিধা বা মাসিক বৃত্তি পাওয়ার সুযোগ রয়েছে বঙ্গবন্ধু শিক্ষা বীমায়।
আইডিআরএ বলছে, জেলা প্রশাসন বা তার অধীনস্ত কার্যালয় জেলা, উপজেলা পর্যায়ে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পরিচালনায় সম্পৃক্ত থাকেন। জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে অনেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান পরিচালিত হয়ে থাকে, যেমন- কালক্টরেট স্কুল, বিয়াম স্কুল ইত্যাদি। জেলা প্রশাসকগণ উদ্যোগ গ্রহণ করলে জেলার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসমূহের শিক্ষার্থীদেরকে এ শিক্ষা বীমার আওতায় আনতে পারেন।
এর ফলে অনাকাংখিত দুর্ঘটনায় অভিভাবকের অবর্তমানে বা অক্ষমতায় শিক্ষার্থীদের শিক্ষা জীবন বিঘিœত হবে না। ঝড়ে পড়ার হার রোধসহ সার্বিকভাবে শিক্ষায় ক্ষেত্রে প্রভূত উন্নতি হবে।
এই প্রেক্ষিতে বঙ্গবন্ধু শিক্ষা বীমা পরিকল্পটির কার্যক্রম সফল করার লক্ষ্যে জেলার সকল সরকারি-বেসরকারি প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয় এবং কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সকল শিক্ষার্থীকে উক্ত পরিকল্পের আওতাভুক্ত করার উদ্যোগ গ্রহণের জন্য জেলা প্রশাসকদের অনুরোধ জানানো হয়েছে এই পত্রে।
পত্রে আরো বলা হয়, বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে ২০২১ সালের ১ মার্চ প্রধানমন্ত্রী ‘বঙ্গবন্ধু শিক্ষা বীমা’ পরিকল্পটি উদ্বোধন করেন। বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের তত্ত্বাবধানে এই বীমা পরিকল্পটি জীবন বীমা করপোরেশনের মাধ্যমে প্রথমে দুই বছরের জন্য সীমিত পরিসরে পাইলটিং করা হয়। ২০২৩ সালে সকল জীবন বীমা কোম্পানির মাধ্যমে বাজারজাতকরণের জন্য উন্মুক্ত করা হয়েছে।
ফলে গত বছরে বেসরকারি কোম্পানিসমূহের মাধ্যমে প্রায় ৭৮ হাজার শিক্ষার্থী এ বীমা পরিকল্পের আওতায় এসেছে। চলতি বছরের শুরুতে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী পরিচালিত সকল স্কুল ও কলেজের শিক্ষার্থীদের এ বীমার আওতায় আনা হয়েছে, যার সংখ্যা প্রায় ২ লাখ। জেনিথ ইসলামী লাইফ ইতোমধ্যে শিক্ষার্থীদেরকে বীমার আওতায় আনতে দেশের চারটি বড় বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে গ্রুপ বীমা করেছে।
Posted ১০:২২ পূর্বাহ্ণ | বৃহস্পতিবার, ০৭ মার্চ ২০২৪
Arthobiz | zaman zaman